ঘরোয়া শাক সবজিতে রোগ সারান
শারীরিক যেকোনো অসুবিধা হলেই যে ওষুধ খেতে হবে, তার কোনো মানে নেই। আমরা দৈনন্দিন যে সমস্ত শাকসবজি খাই সেগুলিই আমাদের শরীরের রোগ প্রতিষেধন করে। আমাদের চারিদিকে যে সমস্ত গাছপালা, আগাছা এবং তার ফল ফলাদির প্রত্যেকটিই আমাদের জন্য কোনো না কোনো ভাবে প্রয়োজনীয়। ঈশ্বর যেমন জীবজগতের সৃষ্টিকর্তা, ঈশ্বর তেমনিই রক্ষাকর্তাও বটে। যে সমস্ত শাকসবজি ফলমূল বাজারে পাওয়া যায় এবং আমাদের আশেপাশে জন্মায় তার প্রত্যেকটি আমাদের দেহরক্ষায় এবং জীবন ধারনের জন্য অপরিহার্য্য। এই প্রতিবেদনটিতে প্রচলিত কিছু শাকসবজির গুনাগুন ও প্রয়োগ বিধি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

টমেটো খান প্রতিদিন
টমেটো হল একটি শীতকালীন সবজি। বাজারে টকটকে লাল টমেটো সকলের নজর টানে। এটি যেমন পুষ্টিকর খেতেও তেমন সুস্বাদু বটে। দৈনিক আহারে টমেটো আপনাকে রাখতেই হবে। এর বিজ্ঞানসম্মত নাম হল-লাইকোপারসিকন এসকুলেনটাম। একটি বড় মাপের টমেটো থেকে আপনি ১২ ক্যালোরি শক্তি পেতে পারেন।
উপকারিতা
- একটি করে পাকা টমেটো দুপুরে ভাত খাওয়ার আগে খোসা ও বীজ সমেত কাঁচা কামড়ে খেলে এবং রাত্তিরে শোওয়ার আগেও এইভাবে খেলে পুরানো কোষ্টকাঠিন্য কয়েকদিনের মধ্যে দূর হয়ে যাবে।
- যাদের ওজন কম তারা যদি খাওয়াদাওয়ার সঙ্গে প্রতিদিন নিয়ম করে একটা পাকা ট্মেটো খান-ওজন নিশ্চয় বাড়বে।
- ফ্যাকাসে রক্তহীন চেহারার ব্যক্তিদের প্রতিদিন নিয়ম করে একটা পাকা টমেটো খাওয়া উচিত-এতে রঙে জৌলুস আসবে ও রক্তকণিকা বাড়বে।
- অর্জুন গাছের ছাল আর চিনি মিশিয়ে টমেটোর রসের অবলেহ ( জ্যামের মত ঘন থকথকে ) তৈরি করে নিয়মিত খেলে বুকের ব্যাথা বা হার্টের ব্যাথা এবং হার্টের অসুখে উপকার পাওয়া যায়।
- পাকা টমেটোর রসে মধু মিশিয়ে খেলে রক্তপিত্ত এবং রক্তবিকার ( রক্তের দোষ ) সেরে যায়।
- পাকা টমেটোর এক কাপ রস প্রতিদিন নিয়ম করে খেলে অন্ত্রের ভেতরে আটকে থাকা মল নিষ্কাশিত হয়ে যায় এবং এইভাবে পুরানো কোষ্টকাঠিন্য সেরে যায়।
- টমেটোর দু এক চামচ রস বাচ্চাদের খাবার খাওয়ানোর আগে খাইয়ে দিলে দুধ তোলা বন্ধ হয়।
- এক কাপ ভাল নারকেল তেল এবং আধকাপ টমেটোর রস একসঙ্গে মিশিয়ে শরীরে মালিশ করলে এবং তার একটু পরে হালকা গরম জলে স্নান করলে শরীরের চুলকানি সারে।
- মাথার খুসকিতে আধাকাপ ভাল নারকেল তেলে ১/৪ কাপ টমেটোর রস মিশিয়ে মালিশ করলে উপকার পাওয়া যায়।
নানা গুনে বেগুন
বেগুন হল অন্যতম জনপ্রিয় সবজি। সারাবছর এটি পাওয়া যায়। এর বিজ্ঞানসম্মত নাম হল-সোলানাম মেলোনজেনা।
উপকারিতা
- যাদের ভালো ঘুম হয়না তা যদি একটু বেগুন পোড়ায় মধু মিশিয়ে সন্ধ্যেবেলা খান তাহলে তাদের রাত্তিরে ভাল ঘুম হবে।
- কচি বেগুন পুড়িয়ে রোজ সকালে খালি পেটে একটু গুড় মিশিয়ে খেলে ম্যালেরিয়ার দরুন লিভার বেড়ে যাওয়া কমে যায়। লিভারের দোষের জন্য চেহারায় হলদেটে ভাব এলে তা ক্রমশ দূর হয়ে যায়।
- বেগুনের তরকারি, বেগুন পোড়া, বেগুনের স্যূপে রোজ যদি একটু হিং ও রসুন মিশিয়ে খাওয়া যায় তাহলে বায়ুর প্রকোপ তো কমেই, যদি কারো বায়ু গোলকের সৃষ্টি হয়ে থাকে সেটাও কমে যায় বা সেরে যায়।
- মহিলাদের নিয়মিত ঋতু না হলে বা কোনো কারণে ঋতু বন্ধ হয়ে গেলে, তারা যদি শীতকালে নিয়ম করে বেগুনের তরকারি, বজরার রুটিএবং গুড় খান তাহলে উপকার পাবেন। অবশ্য যাদের শরীরে গরমের ধাত বেশি তাদের পক্ষে এটা না খাওয়াই ভাল।
- নিয়মিত বেগুন খেলে মূত্র কৃচ্ছতা সারে।
- প্রস্রাব পরিষ্কার হওয়ায় প্রারম্ভিক অবস্থায় কিডনির ছোট পাথরও গলে গিয়ে প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যায়।
- ছোট ছোট গোল গোল সাদা বেগুন অর্শের পক্ষে উপকারী।
- বেগুনের পুলটিস বাঁধলে ফোঁড়া তারাতারি পেকে যায়।
- বেগুনের রস খেলে ধুতরোর বিষ নেমে যায়।
Comment (1)
[…] হল একটি মূলজ সবজি। শীতের মরশুমে বাজাড়ে একে পাওয়া […]