চুলের সমস্যার একগাদা সমাধান

উজ্জ্বল চুলের জন্যঃ
অনেক সময়ে পর্যাপ্ত যত্ন অথবা কণ্ডিশনিং এর অভাবে চুলের উজ্জ্বলতা কমে যায়। নিন্মলিখিত পদ্ধতিগুলি অবলম্বন করলে চুল উজ্জ্বল হবে। পাকা কলা, মধু ও নারকেল তেল একসঙ্গে মিশিয়ে মাথায় লাগান। আধঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলুন। নারকেল তেলে আমলা ফোটান অন্তত আধঘণ্টা ধরে। এই তেলটি স্নানের আধঘণ্টা আগে নিয়মিত মাথায় লাগান। আমলার রস ও নারকেলের দুধ একসঙ্গে মিশিয়ে মাথায় লাগান । ঘণ্টাখানেক পড় ধুয়ে ফেলুন। লেবুর রস জলে মিশিয়ে চূল ধোয়ার পর এই মিশ্রণ দিয়ে চুল ভিজিয়ে নিন। একইভাবে বরফঠাণ্ডা জলে দুই বড় টেবিল চামচ কমলালেবুর রস মিশিয়ে সেটি দিয়ে চুল ধুয়ে নেবেন। যে কোনো ভেষজ তেলের সঙ্গে মধু, দুধ, ডিমের সাদা অংশ ও পাকা পেঁপে চটকে মাথায় লাগান বিশেষ করে চুলের ডগায়। আধঘণ্টা বাদে ধুয়ে ফেলুন। আনারস ও কমলালেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে সেটি মাথায় লাগিয়ে রাখুন আধঘণ্টা। শ্যাম্পু ছাড়া জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নারকেল কূড়ে তা থেকে দুধ বের করে নিন। নারকেলের দুধ ও লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে সেটি মাথায় লাগিয়ে রাখুন ঘণ্টাখানেক। তারপর ধুয়ে ফেলুন। পামিং লোশন, হেয়ার ড্রাই ইত্যাদির ব্যবহারে চুল রুক্ষ হউএ গেলে পিচ ফলের শাস ও টাটকা ক্রিম মাথায় লাগাতে পারেন।
খুশকিঃ
খুশকির কারনে চুলের সৌন্দর্য শুধু যে নষ্ট হয় তা নয় খুশকির ক্রমাগত সংক্রমণে চুল পড়ে যেতেও পারে। তাই মাথায় খুশকি দেখা দিলেই নিন্মলিখিত উপায়গুলিই অবলম্বন করতে পারেন। এক চামচ কাঁচা পেঁপের আঠার সঙ্গে সাত আট চামচ জল মিশিয়ে মাথায় লাগালে খুশকি সেরে যাবে। গরম জলে পাতিলেবুর রস মিশিয়ে সেই জলে মাথা ধোবেন স্নানের পর। সপ্তাহে একদিন ডাবের জল দিয়ে চূল ধূলে খুশকির ভয় থাকেনা । কলা ও মোসাম্বি লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে মাথায় লাগালে খুশকি যেমন সেরে যায় তেমনই চুল মসৃন হয় । কর্পূর কমলালেবুর রস ও গরম জল একসঙ্গে মিশিয়ে এই মিশ্রণটি মাথায় লাগান একদিন অন্তর। আধঘণ্টা বাদে ধুয়ে ফেলুন। মেথি পাতা ও নারকেলের জল একসঙ্গে বেটে মাথায় লাগান, কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করুন। আধঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন উষ্ণ জল দিয়ে। জয়তুন থেঁতো করে সেটি মেশান গরম জলপাই তেলের সঙ্গে। এই মিশ্রণটি মাথায় লাগান সপ্তাহে অন্তত একদিন। খুশকি হবেনা। মডার্ন হারবালের হেয়ার ফার্টিলাইজার এই সকল হারবাল দ্রব্য দিয়ে তৈরি। মূল্য মাত্র ৪০ টাকা(১০০ এম. এল) যা ব্যবহারে আপনার খুশকি চলে যাবে।
চূল উঠলে কি করবেন
অনেক সময় শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব ঘটলে চূল উঠতে পারে। চুল ইয়থলে খাদ্য তালিকার দিকে নজর দিন, বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন ,মাথায় কোনো সংক্রমণ ঘটেছে কি না। তাছাড়া নিন্মলিখিত পদ্ধতিগুলি অবলম্বন করতে পারেন। পাচ চামচ নারকেলের দুধে, এক চামচ লেবুর রস ও এক চামচ কালোজিরার তৈল, আমলার রস মিশিয়ে মাথায় লাগান শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন ঠাণ্ডা জল দিয়ে। ডিমের হলুদ অংশ ও আমের শাস একসঙ্গে মিশিয়ে সেটি লাগান চুলের গোড়ায় আধঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন। শসার রস ও মেথি বাটা একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি মাথায় লাগিয়ে আধাঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন। চায়ের পাতা ডাবের জলে ফূটিয়ে মাথায় লাগিয়ে নিন।আধঘন্টা পর চুল ধুয়ে নিন। তরমুজের রস ও ডাবের জল একসঙ্গে মিশিয়ে মাথায় লাগান সপ্তাহে একদিন । শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন।

আমঃ
আমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার, প্রচুর পরিমাণে কপার, ফোলেট, কার্বোহাইড্রেট— এমনকি প্রোটিনও। এ ছাড়া ভিটামিন— এ, বি৫, বি৬, সি, ই, কে’র মতো প্রায় পাঁচ রকমের ভিটামিন।এই ফলটিকে এশীয় ফলের রাজা বলা যায়। আমের মধ্যে চুলের অমসৃণ অংশকে আর্দ্রতা জুগিয়ে মোলায়েম করার ক্ষমতা যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে এপিথেলিয়াল কোষকে পর্যাপ্ত পুষ্টি যোগানোর ক্ষমতা। এছাড়াও এর মধ্যে বিদ্যমান ভিটামিন সি এবং বি কমপ্লেক্স ( বি-১, বি-২) ,মিনারেল সল্টস, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস মাথার ত্বকের ভেতর থেকে পুষ্টি জুগিয়ে চুলকে নরম ও মসৃণ করে তুলে।
আমলাঃ
চুলের জন্য বহু প্রাচীন যুগ থেকেই প্রকৃতিজ প্রসাধন সামগ্রীতে নিয়মিত উপস্থিতি আমলার ও কালোজিরার তেল। এর কারন আমড়ার ভেষজ গুণে চুল পড়া বন্ধ হয়, বাড়ে বেশি , চুল কালো হয়, চুল সাদা হওয়া বন্ধ হয়। এ ছাড়াও এটি রস ত্বক শীতল করতে বা অ্যাসট্রিনজেণ্ট হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। আমলাতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন সি, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও আয়রন।

চুলের সৌন্দর্য রক্ষায়ঃ
চুলের সৌন্দর্য রক্ষার কাজটি করে ভিটামিন-“সি”। ভিটামিন “সি” চুলকে শুস্কতার হাত থেকে রক্ষা করে এবং সহজে ভেঙ্গে যেতেও দেয় না। চুলের স্বাভাবিক জেল্লা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া চুল সহজে ওঠেও না। ভিটামিন সি ছাড়াও ছাড়াও ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, এবং সোডিয়ামের মতো খনিজ খাদ্যোপাদানগুলিও চুলের স্বাস্থ্য গঠনের জন্য প্রয়োজন। চুলের স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য রক্ষায় টমেটো, গাজর, বাঁধাকপি, লেটুস ও মেথিশাক প্রভৃতি সবজি খাবেন। অপুষ্টির কারনে চুল ওঠা ঠেকাতে নিয়মিত ভাতের সঙ্গে মেথি ও থানকুনি শাক খাবেন। এই দুটি শাক চুলের গোড়ায় পুষ্টি জোগায় এবং খুশকি তাড়ায়। মেথিপাতা চুলকে করে ঘন ও কালো।
Leave a Reply